প্রতিবেশী ভারতের সীমান্তবর্তী সুনামগঞ্জ জেলা প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যে অতুলনীয়। সুনামগঞ্জের উত্তরে রয়েছে মেঘালয়ের সুউচ্চ পাহাড় শ্রেণি। এইসব পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরণা আর নদী যেমন এই জেলাকে শোভামণ্ডিত আর সবুজে আচ্ছাদিত করেছে, তেমনি অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট অকাল বন্যা মানুষের জীবনকে করে দুঃসহ। প্রাকৃতিক অনিশ্চয়তা এই জেলার মানুষকে করে তুলেছে ভাবুক, দেশের অন্য সব জেলার তুলনায় স্বতন্ত্র ও স্বকীয়। মানুষ মুখে মুখে গান বাঁধে, গান তোলে নিজস্ব সুরে। হাওর যখন পানিতে ডুবে যায়, মানুষের হাতে তখন অফুরন্ত অবসর। মানুষের দুঃখবোধ যেন বাউল গানে রূপ নেয়। হাজার বছর ধরে হাওর বেষ্টিত এই জনপদ অসংখ্য বাউল, মরমীয়া সাধক উপহার দিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জের নাচ, গান সর্বোপরি শিল্পের মধ্যে আধ্যাত্মবোধ, জীবনবোধের গভীরতা ও অসাম্প্রদায়িক মানবতাবোধ সম্পন্ন সম্পূর্ণ পৃথক একটি স্বত্ত্বার পরিচয় পাওয়া যায়, যেটি আর কোথাও দেখা যায় না। নদী, হাওর ও বাঁওড় বেষ্টিত এই জনপদ আবহমান কাল ধরে সৃষ্টি করে চলেছে সুরের দ্যোতনা। হিজল-করচ, পরিযায়ী পাখি আর জীব বৈচিত্র্যের আধার এই ভাটি জনপদ নিজেদের সংস্কৃতির পাশাপাশি জাতীয় জীবনের সংস্কৃতির ধারাকে আলোকিত করে চলেছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস